কল _সেন্টার_এর সেই মেয়েটি

 



- উহু রে আবার আজকে টাকা
কেঁটে নিছে...
সালার সিম কোম্পানি গুলো কী
ইদানিং আমার থেকে ও বড় ফিইন্নি হয়ে গেছে নাকি...
কত চিল্লাই চিল্লাই ৫০ টাকা
আব্বার কাছে থেকে নিয়ে আসলাম..
আর ২৫ মিনিটের মধ্যে তিনটা
এস এম এস দিয়ে সব কেঁটে নিয়ে..
আর অবোলার মতো ৪ টাকা
ব্যালেন্স এ পড়ে আছে...
মেজাজটা কেমন লাগে এখন..

এই চার টাকা দিয়েই সব গুলারে
বাঁশ দিমু... এই দিকে
মিনিমান একশো টাকা এমনে
চলে গেছে...
আগে দুই চার টাকা করে যেত
কিছু বলিনাই...
তাই বলে এইবার পুরোটাই নিবে
সেটা তো মানা যায় না।

দিলাম ফোন ১২১ এ...
মনে মনে বলতেছি সালার খালি
ধর ফোনটা একবার।

- জ্বী স্যার কেমন করে আপনাকে সাহায্য করতে পারি ।
- ওরে সালা... কী সুন্দর ভয়েজ মেয়েটার, ভয়েজ টয়েজ এ দিকে পড়লে
হবে না...
টাকা গুলার প্রতিশোধ নিতে হবে।

- আপনার নাম কী?
- সরি স্যার... আপনি শুধু আপনার
সমস্যার কথা টাই জানাতে পারবেন।
- ঐ ছেমড়ি ভালোই ভালোই নাম
বাতাও.... না হলে কিন্তুু...।
- সরি স্যার.... নাম বলতে পারবো না।
- ওহহহহহহ.... আচ্ছা আপু আমি কারো
নাম না শুনলে কথা বলতে পারি না...
তাই আগে নামটা বলুন।
- ঠিকআছে স্যার ... আমি ইরা...।
- বাহ্... সুন্দর ভয়েজ, নামটা ও বাঁধিয়ে
রাখার মতো...
তো এই চোর পট্টি তে চাকুরি নিছেন
কেন শুনি...।
- সরি স্যার... ঠিক বুঝলাম না।
- আপনার বুঝে কাজ নাই... আগে
এটা বলুন যে এই সিম কম্পানির মালিক
এর কী... হেতেরে যদি পাই
একটা চটকানি দিয়ে টাকা
ফেরত নিতাম...
দেশে এত বড়লোক মানুষ
থাকতে..
আমার মতো এই গরীবের কাঙ্গালের সিমের টাকা গুলাই কেঁটে নিতে
হবে বলেন।
- আচ্ছা স্যার... আপনার সমস্যার কথাটা
আমাকে বলুন... দেখি আমি কিছু
করতে পারি কী না।
- সমস্যার কথা আর কি কমু... কইলেই
তো উল্টা পাল্টা বুঝ দিয়ে দিবেন...
৫০ টাকা তুলছিলাম একটু আগে,
এখন আর কিচ্ছু নাই।
- স্যার.. মনে হয় আপনার কোন
প্যাকেজ চালু করা আছে.... আমি
দেখছি সেটা।
- হুমমমমমমমম... ঐটাই তো বলবেন
এখন... ঐটা দেখে আমার
টাকা আমাকে ফেরত দিয়ে
দিলেই তো হয়।।।
- স্যার... ওটা আসলে আমাদের
নিয়ম এর মধ্যে নেই।

- তা থাকবে কেনো... ভালো জিনিস
তো নিয়মের মধ্যে থাকবেই না।
- স্যার আপনার কয়েকটা প্যাকেজ..
চালু আছে..সেই জন্য আপনার টাকা
কেঁটেছে... আমি কী সে গুলো
বন্ধ করে দিবো।
- আচ্ছা টাকা গেছে সেটা আর ফেরত
পামু না সেটা আমি জানি...
আচ্ছা আপনার কোন বয়ফ্রেন্ড আছে।
- সরি স্যার...।
- ওহহহহহহহ সরি বলতে হবে না...
বয়ফ্রেন্ড মানে হইলো প্রেমিক..
আছে নাকি কোন হুমমমমমমম।

ওমনি লাইনটা কেঁটে গেলো....।

লাইন কাটছো তো কীইইইইই হইছে
মনু... তোমার পিছন আমি ছাঁড়বো
না হুমমমমম।

একটু পড়ে আবার ফোন...।

- হাই... আমি সাহরিয়া... তুমি
কী ইরা বলছো...।
- জ্বী.. স্যার বলেন।
- আরে দূর আমাকে স্যার বলা লাগবে
না... আমি তোমার কোন জনমের
শিক্ষক তাই স্যার বলবা... আমাকে
সাহরিয়া বলো.... সাহরিয়া
বুঝলা... আর একটু আগে আমিই
ফোন দিছিলাম... নামটা
মনে রাখবা কেমন।
- সরি.. স্যার..।
- ওহহহহহহ... এই সরি স্যার..বলা ছাঁড়া
আর কিছু জানো না হুমমমমম...
তোমার নাম্বারটা দিবা..।

আবার ফোন কেঁটে গেলো।

- একটু পর দেখি... হায় হায় সিমটা বন্ধ
করে দিছে... তিন দিনের জন্য..।
একটা বন্ধ করছো তো কী
হইছে আরো ৫ টা আছে..।

পরেরদিন আবার ফোন।

- হ্যালো....।
- আপনাকে কী করে সাহায্য
করতে পারি...।
- আরে আমি সাহরিয়া... কেমন
আছো...
কী ভাবছো হুমমমম ঐ সিম বন্ধ করে
দিছো বলে আর ফোন দিব না...
তোমার পিছন তো আমি ছাঁড়ছা না
হি হি হি...
আরে তোমার নাম্বারটা দাও না।
- দেখেন এবার কিন্তুু খুব খারাপ
হয়ে যাবে হুমমমমমম।
- আচ্ছা সেটাই তো চাই আমি দেন
না.. নাম্বারটা পিলিজ..।

আবার ফোনটা কেঁটে গেলো...

ওমা এই সিমটা ও বন্ধ করে
দিছে......।

এমন ভাবে কয়দিন চলছে...
তবে ইয়া ফোন ধরছে না
সব ছেলে ধরছে।

আবার একদিন।

- হ্যালো....।
- স্যার কেমন করে আপনাকে
সাহায্য করতে পারি।
- ভাইয়া আপনার সাহায্যের কোন
দরকার নেহি আমার...
ইরা নামের একজন আছে
তাঁকে লাইনে আসতে বলেন।
- সরি স্যার....।
- তাইলে আর কী করার...
আপনাগো যদি কথা বলাই কাজ
হয়.. তাইলে আমি ফোন দিতেই
থাকমু...
দেখি কয় জন এমন করে..
কেউ না কেউ তো তাঁকে লাইনটা দিবেই।

একটু পরে হঠাৎ একটা আন নন
নাম্বার থেকে ফোন আসলো।

- হ্যালো কে বলছেন....।
- ঐ আপনার সমস্যাটা কী
বলেন।
- কেন আমার আবার কী সমস্যা....
গলাটা কেমন চেনা চেনা লাগছে।
- একটা থাপ্পড় দিমু।
- ওহহহহহহ... ইরা... এটা তোমার
নাম্বার।
- না এক ফ্রেন্ড এর... কত টাকা আপনার
কেঁটে নিছে বলেন... আমি দিয়ে
দিচ্ছি তবু এমন জ্বালাবেন না।
- না না... এটা তো আর টাকার ব্যাপার
নাই.. জল অনেক দূর এগিয়েছে।
- মানে কীইইইইই ....।
- আমি তোমারে ভালোবেঁসে ফেলছি।
- আচ্ছা বেয়াদব তো আপনি
..আমাক দেখছেন কখন ও।
- তোমারে দেখে কী করবো... তোমার
ভয়েজ এর প্রেমে পড়ছি গো।
- ওহহহহহহহ... কী চান বলেন তো।

- তেমন কিছু না.... দেখা করবা,
তাহলেই হবে।
- আমি দেখতে তেমন সু্ন্দরী না...
বুঝেন একটু।
- না না আমি তো দেখা করবোই।
- ঠিকআছে বলেন...।
- কালকে বিকেল ৫ টাই কেমন।
- ঠিকআছে ... কিন্তুু চিনবা কেমনে।
- আরে ভয়েজ শুনে।
- ওকে এখন বাই... আর এটা আমারই
নাম্বার।
- হি হি জানি আমি।

পরের দিন বিকেলে যেখানে
দেখা করার কথা সেখানে
দাঁড়িয়ে আছি...
একটু পরে দেখি সামনে থেকে শাড়ি
পড়া একটা মেয়ে আমার দিকেই
আসছে...
চেহারাটা অনেক সুন্দর আর মায়াবী
তবে বেশি ফর্সা না।

তখনি দুষ্টুমি বুদ্ধি মাথাই আসলো...
পাগলিটাকে নিয়ে একটু মজা
করা যাক।

ইরা আমার কাছে আসলো...।

- সাহরিয়া....।
- হুসমমমমমম... তুমি ইরা।
- আচ্ছা চলো ঐ খানে গিয়ে বসি।
- ঠিকআছে।
- সাহরিয়া... জানো... আমি ভাঁবিনি
তুমি দেখতে এমন কিউট হবে।
- হি হি হি.... লজ্জা দাও তাই না..
তবে একটা কথা।
- কী কথা।
- তোমার ভয়েজ এর সাথে চেহারার
কোন মিল নেই।
- আমি দেখতে খুব খারাপ তাই
না।
- আরে আমি সেটা বলি নাই।
- আমি জানি সাহরিয়া...
আমাকে দেখে সবাই সেটাই
বলে...
আমি কী করবো বলো,
আল্লাহ্ কেন আমাকে এমন
করলো...।
- আরে আমি ওমনটা বলতে চাইনি।
- এটা তোমার দোষ না... আচ্ছা আমি
গেলাম.... ভালো থেকো... আর
তোমার বউ খুব লাকি হবে।

- ইরার চোখে পানি.. তবে সেটা
সে আমাকে বুঝতে না দিলে ও
আমি বুঝতে পাড়ছি...
বাসাই গিয়ে সে খুব কাঁদবে সেটা ও
আমি জানি..
তবে সে সুযোগ দিলে তো...
দূর মজা করতে গিয়ে খালি কষ্ট
দিলাম।

- পিছন থেকে জোরে বলে ফেললাম..
ইরা আমি তোমাকে ভালোবাসি খুব
ভালোবাসি।
এমন সময় দৌঁড়ে এসে আমাকে জরিয়ে
ধরলো আর আমি ও...
- আরে বোকা আমি তো এমনি মজা
করছিলাম...তাই বলে এমন কাঁদবে,
আমি তোমাকে ভালোবাসি বুঝলে
তোমান নরম স্পর্শ কাতর মন টাকে
ভালোবাসি... আর তোমার ভয়েজ
টাকে ...
আমাকে একটু ভালোবাসবা পিলিজ।
- শুধু মাথা নাড়ালো।
- ঐ এমন ভাঁবেই তো জরিয়ে ধরে
থাকবা সারাটাজীবন...।
- আবার ও শুধু মাথা নাড়ালো ...।
- আমার কপাল তো অনেক
ভালো... কারণ তুমি আমার বউ
হি হি হি।
দেখি আরো জেরো জরাই ধরছে,
আর কাঁদছে...।
- ঐ এমন কাঁদলে তো.. তোমার চোখের
পানি দিয়েই আমার আবার গোসল
হয়ে যাবে।
- তাই না শয়তান একটা..
বলেই কিল ঘুঁসি মারতে
লাগলো।
- ঐ এমন মারলে তো মরেই যাবো।
- চুপপপপপপপপপপ।
- ঐ যে দেখো সবাই তোমার
দিকে তাঁকিয়ে আছে...
- লজ্জাই আবার বুকে মুখ লুকালো।
- জানো... ইরা.. আমি ভাবছি
যেদিন আমাদের বাসর হবে..
সেদিন সারারাত
ফোনে কথা বলবো...
আচ্ছা দুই টাকায় সারারাত এমন
কোন অফার আছে....  😉
------The En---------
  

Comments